মো. হাফিজুর রহমান,তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে স্ত্রীকে আনতে গিয়ে শ্বশুরবাড়ি বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ইব্রাহিম (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা করেছেন নিহতের বাবা। মৃত ইব্রাহিম উপজেলার নিশানবাড়িয়ার মৌরভীর এলাকার বাদশ খলিফার ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে ইব্রাহিমের সঙ্গে একই উপজেলার বড়বগীর ছোটভাইজোড়া এলাকার দেলোয়ার হাওলাদারের মেয়ে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। গত চার মাস আগে একটি সন্তান হলে লামিয়া বাপের বাড়িতে চলে যায়। সে সময় স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসেন ইব্রাহিম। পরে নোয়াখালী রাজমিস্ত্রির কাজ করতে চলে যান তিনি। নোয়াখালী থেকে চার মাস পরে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এ সময় লামিয়া জানান, তালতলী সদরে যদি বাসা নিয়ে থাকা যায় তাহলে স্বামীর সঙ্গে থাকবেন তিনি। স্ত্রীর কথায় ইব্রাহিম তালতলী সদরে বাসা নিয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শ্বশুরবাড়ি স্ত্রীকে আনতে যায়। এ সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ইব্রাহিমের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগ করে ঘরের একটি খাটে শুয়ে থাকেন ইব্রাহিম। পরে রাত ২টার দিকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইব্রাহিমের শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে সন্ধ্যার এসে তাঁদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন ইব্রাহিম। তাঁকে বলেছি বিশ্রাম করতে সকালে যাবে। এ কথা বলায় ইব্রাহিম জেদ করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। পরে রাতে দেখি আমার পেছনের একটি ঘরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলে আছে। এর বেশি কিছু জানি না। ইব্রাহিমের বাবা বাদশ খলিফা বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে গত ৪ মাস আগে আমার ছেলে তাঁর স্ত্রীকে আনতে গেলে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছে তাঁর শ্বশুর। পরে ছেলে নোয়াখালী চলে যায়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর গলায় ওড়নার দাগ রয়েছে। এটা প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা অপমৃত্যু মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।